মুক্তিপণ জোগাড়ের পর বাবা জানলেন, ছেলে বেঁচে নেই
গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর মেহেদী হাসান (১০) নামের একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের বাগানেরটেক এলাকা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মেহেদী হাসান ওরফে মাহিম টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বেরাইদ গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে। আমিনুল ইসলাম স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার মাদখলা গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন। এ ঘটনায় পুলিশ রনি মিয়া (২৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। রনি গোসিংগা ইউনিয়নের সাভারচালা গ্রামের আবদুস সাত্তারের ছেলে।
সোমবার বিকেলে অপহৃত হয় শিশু মেহেদী। এরপর অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তার পরিবারের কাছে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তারা অপহরণকারীকে ধরতে শ্রীপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শ্রীপুরের কাওরাইদ রেলস্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে রনি মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে রনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেন। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গোসিংগা ইউনিয়নের সাভারচালা গ্রামে শালবন থেকে মেহেদীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা খোঁজাখুঁজি করেন। আশপাশের লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন, মাহিমকে রনি মিয়ার সঙ্গে দেখা গেছে। পরে রনির বাড়িতে গিয়ে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর রাতে মেহেদীর মায়ের মুঠোফোনে অজ্ঞাতপরিচয়ে এক ব্যক্তি ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। তিনি মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করে ফোন দিলে ওই নম্বর বন্ধ পান। পরে পুলিশ ছেলের লাশ উদ্ধার করে।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইসমাইল হোসেন জানান, মাদখলা গ্রামে নিহত শিশুটির পরিবারের ভাড়া বাড়ির পাশেই রনি মিয়া থাকতেন। রনি মিয়া ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সোমবার বিকেলে শিশুটিকে ঘোরার কথা বলে ডেকে নিয়ে যান। সন্ধ্যায় তাকে বনের ভেতর নিয়ে মুক্তিপণের জন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রনি। তিনি মুঠোফোনে মাহিমের মায়ের কাছে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে রনি। সময়মতো টাকা না পেয়ে তিনি শিশুটিকে হত্যা করেন। গ্রেপ্তার রনি এর আগে শ্রীপুর থানার একটি মামলায় সাজা ভোগ করেছেন।