বান্দরবানের ৩ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত
দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতির ঘটনায় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের মধ্যে বান্দরবানের থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আগামী ৮ মে রোয়াংছড়ি ও থানচিতে এবং রুমার ২১ মে ভোটের তারিখ রেখে তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি এখন বলছে, পরে সুবিধাজনক সময়ে এ তিন উপজেলায় ভোটের আয়োজন হবে।
মঙ্গলবার সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে ষষ্ঠ উপজেলা ভোট নিয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
চার নির্বাচন কমিশন, জননিরাপত্তা বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বেলা ১১টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টার এই বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, সভায় আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এবার উপজেলা নির্বাচনে অন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চেয়ে বেশি সংখ্যায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হবে। চার ধাপে ভোট হওয়ায় জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী সদস্য মোতায়েন করা হবে।
“পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বিশেষ করে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। আপাতত এ তিনটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে এ নির্বাচন করা হবে,” বলেন সচিব।
অভিযান চলমান থাকায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে এ তিন উপজেলার নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব জাহাংগীর আলম।
এবার প্রথম ধাপে ১৫০ ও দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলার ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তৃতীয় ধাপে ১১২ টির ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ৫ জুন।
২ এপ্রিল রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি করে অর্থ লুট করে একদল সশস্ত্র লোক। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করার পাশাপাশি পুলিশের ১০টি এবং আনসার সদস্যের চারটি অস্ত্রও লুট করে নিয়ে যায় তারা।
রুমার ঘটনার পরদিন থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকেও দিন-দুপুরে ডাকাতি হয়। দুই ঘটনাতেই পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ জড়িত বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্য।
ডাকাতির ঘটনার দুদিন পর রুমার একটা পাহাড়ি এলাকা থেকে ছাড়া পান ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিন। এরপর থেকে লুট হওয়া অস্ত্র-অর্থ উদ্ধার এবং ‘সন্ত্রাসীদের’ গ্রেপ্তারে রুমা ও থানচিতে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ সদস্যারা অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
যৌথ বাহিনীর এই অভিযানে বিভিন্ন এলাকা থেকে এখন পর্যন্ত ২১ নারীসহ ৭১ জনকে গ্রেপ্তারের খবর জানিয়েছে পুলিশ। অভিযান সমন্বয় করছেন সেনাবাহিনী।
বান্দরবানের রুমায় যৌথ বাহিনীর অভিযানের মধ্যে সোমবার কেএনএফের এক ‘সদস্যের’ নিহতের খবর জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর।