মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আপডেট: ১৬:২০, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্বামী-স্ত্রী একসাথে মৃত্যু, চিরকুটে লেখা পাশাপাশি কবর দিও

স্বামী-স্ত্রী একসাথে মৃত্যু, চিরকুটে লেখা পাশাপাশি কবর দিও

গাজীপুরের শ্রীপুরের একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মারা যাওয়ার আগে লেখা একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়।  শুক্রবার সকালে উপজেলার মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার এক কক্ষের একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন। 

নিহত মো. ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানার হলদি গ্রামের মো. মফিজুল হকের ছেলে ও মোছা. রোকেয়া খাতুন (১৫) ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। 

প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে সাত-আট মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। ইসরাফিল একটি ওয়ার্কশপে এবং রোকেয়া পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

নিহত ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, মুলাইদ এলাকায় তাদের ভাড়া বাসায় থাকত ইসরাফিল। পরিবারের অমতে রোকেয়ার সঙ্গে বিয়ের পর ইসরাফিল স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। 

পরে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে স্ত্রীসহ তাকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর তাদের পাশের ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিল ইসরাফিল ও রোকেয়া। 

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান। তখন ইসরাফিলকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের উপর বিছানায় দেখতে পান। 

পরে খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। 

নিহত রোকেয়ার বড় ভাই মো. বোরহান উদ্দিন জানান, বিয়ের পর ইসরাফিল ও রোকেয়া নিখোঁজ ছিলেন। থানায় জিডির পর ওদের সন্ধান পেয়ে উভয় পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে মিলমিশ হয়। তারপর তাদের সম্পর্ক ভালই চলছিল বলে জানি। 

“সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার আবার বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়েছিল। এরপর আর তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।”

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, লাশের পাশের টেবিলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। 

চিরকুটে লিখা ছিল, “মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সাথে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারো কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা। -মোঃ ইসরাফিল।”

“মা, আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁসি দিল। তার জন্য সম্পূর্ণ আমি দায়ী। এতে কারো কোনো দোষ নাই।” 

এছাড়া তার কবরের পাশে স্ত্রীকে কবর দিতেও চিরকুটে মাকে অনুরোধ করেছেন ইসরাফিল।  পরিদর্শক সাখাওয়াত বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করেন। বিষয়টি সইতে না পেরে স্বামীও আত্মহত্যা করেন। 

লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়