মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৯:১৬, ১৪ মে ২০২৪

আপডেট: ০৮:৩৯, ১৫ মে ২০২৪

দুঃসহ এক সময় পার করে এসেছি মুক্ত জীবনে: আতিকুল্লাহ

দুঃসহ এক সময় পার করে এসেছি মুক্ত জীবনে: আতিকুল্লাহ

জাহাজ থেকে নেমে এলেন হাসিমুখে, অপেক্ষায় থাকা সন্তানদের জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন; বললেন, দুঃসহ এক সময় পার করে ফিরেছেন মুক্ত জীবনে। ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি দশার অভিজ্ঞতা নিয়ে সন্তানদের কাছে ফিরে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করলেন এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান।

আতিকুল্লাহকে নিতে এসেছিল তার দুই মেয়ে ফাতেমা, উনাইজা এবং ছোট ভাই আতিক খান। জাহাজ থেকে নেমেই দুই মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন তিনি।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমরা একটা বীভৎস সময় পার করে আলোয় এসেছি। স্বজনদের কাছে পেয়ে, দেশের মাটিতে পা দিয়ে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে- প্রকাশ করা যাবে না।”

সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছেন মঙ্গলবার বিকালে, যাদের জন্য দুই মাস ধরে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কেটেছে স্বজনদের।

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের (এনসিটি-১) জেটিতে বিকাল ৪টায় ভেড়ে নাবিকদের বহনকারী জাহাজটি। এর আগে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় কুতুবদিয়ায় নোঙর করে এমভি আবদুল্লাহ। সেখান থেকে লাইটার জাহাজ জাহান মনি-৩ নাবিকদের নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।

চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর নাবিকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকা স্বজনরাও নাবিকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতা থেকে বেঁচে ফিরে পরিবারকে কাছে পেয়ে এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন নাবিকরা।

সাধারণত নাবিকরা ছয় মাস বা আরো বেশি সময়ের জন্য জাহাজে করে দেশ ছেড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যান। জাহাজ ভেড়ে বিশ্বের নানা বন্দরে। তাই দীর্ঘ সময় প্রিয়জনদের অনুপস্থিতিতে খানিকটা অভ্যস্ত থাকেন নাবিকদের স্বজনরা। কিন্তু এবারের ফেরা অন্য রকম।

আতিকুল্লাহ খানের মেয়ে উনাইজা সাংবাদিকদের বলে, “বাবাকে কাছে পেয়ে ভালো লাগছে। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ফুরাল। বাবার জন্য চমকও রয়েছে আমাদের পক্ষ থেকে।” দুই মাস আগে গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরের সোমালিয়া উপকূলে সশস্ত্র সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে আবদুল্লাহ; নাবিকরা হন জিম্মি।

পরিবারের সদস্যদের ফোন করে তারা জানান, মুক্তিপণ না দিলে তাদের একে একে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেই থেকে পরিবারের সদস্যদের ফিরে পেতে উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ আর অনিশ্চিত অপেক্ষার শুরু।

আন্তর্জাতিক বাহিনী, সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষের বিভ্নি্নভাবে চেষ্টার এক মাস পর জিম্মি দশা থেকে জাহাজসহ মুক্ত হন নাবিকরা। কিন্তু বাড়ি ফিরতে লেগে যায় আরও এক মাস। মুক্তির পর নাবিকরা জাহাজ নিয়ে যান আরব আমিরাতে। সেখানে পণ্য খালাস করে ফের মালামাল তুলে রওনা হন দেশের পথে।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়