মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:২৩, ৩১ মে ২০২৪

আপডেট: ১২:২৩, ৩১ মে ২০২৪

নীলফামারীর ডিমলায় ঝড়ে ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত

নীলফামারীর ডিমলায় ঝড়ে ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত

নীলফামারীর ডিমলায় ঝড়ে চারটি ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, নাউতরা ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ওই ঝড় বয়ে যায়। এসময় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ ঝড় শুরু হয়। এসময় খালিশা চাপানী ইউনিয়নের ছোটখাতা, ডালিয়া, বাইশপুকুর গ্রামসহ ঝুনাগাছ চাপানী, নাউতরা ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক পরিবারের কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়, উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়ে অসংখ্য গাছপালা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাঁচ শতাধিক কাচা ও আধাপাকা ঘর-বাড়ি। ঝড়ে অধিকাংশ ঘরের টিনের চাল ও বেড়া উড়ে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি আহত হয়।

খালিশা চাপানী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুজ্জামান সরকার বলেন, ঝড়ে আমার ইউনিয়নের বাইশপুকুর গ্রাম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুপুর ১টা পর্যন্ত খবর পেয়েছি শতাধিক পরিবারের টিন ও বাঁশের কাচা ঘর ঝড়ে উপড়ে গেছে। গাছপালা উপড়ে ও ভেঙ্গে  পড়েছে। ঝড়ে গৃহপালিত পশুরও মৃত্যু হয়েছে।'

গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ইবনে ফয়সাল বলেন,'ঝড়ে আমার ইউনিয়নের দক্ষিণ গয়াবাড়ি গ্রামের ভেণ্টিয়াপাড়া, চেয়ারম্যান পাড়া, নয়া জামায়াত পাড়ার শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।'

ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. একরামুল হক বলেন, 'ঝড়ে আমার ইউনিয়নের ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ি, উত্তর সোনাখুলিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে দুই শতাধিক পরিবারের ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।'

নাউতরা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ বলেন, 'ইউনিয়নের আকাশকুড়ি, নিজপাড়া, কাকড়া, সাতজান ও শালহাটি গ্রামের ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ এর খুটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। তালিকা প্রনয়নের কাজ চলছে।'

নীলফামারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেষ্ঠ মহা-ব্যবস্থাপক মো. মফিজুর রহমান বলেন, 'ওইসব এলাকায় ঝড়ে বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনের আটটি খুটি উপড়ে পড়ে। এবং সাতটি ট্রান্সমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিন শতটি স্থানে সরবরাহ লাইনের তার ছিড়ে গেছে। এসব মেরামতের কাজ চলমান আছে। অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।'

ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মেজবাহুর রহমান বলেন, 'ঝড়ে যেসব এলাকায় মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।'

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, ' উপজেলার খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, নাউতরা ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যানগণ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংগ্রহ করছেন। সন্ধ্যার মধ্যে তালিকা চেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হাতে পেলে রাতেই জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।'

সর্বশেষ

জনপ্রিয়