মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ৫ জুন ২০২৪

বাবা-মাকে চাপ দিয়ে মোটরসাইকেল কেনার পরদিনই প্রাণ হারালেন তরুণ

বাবা-মাকে চাপ দিয়ে মোটরসাইকেল কেনার পরদিনই প্রাণ হারালেন তরুণ

মা-বাবাকে বাধ্য করে মোটরসাইকেল কিনে পরদিনই সড়কে প্রাণ হারালেন তরুণব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের তরুণ শাহ মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে আসিফ (২৩) ছিলেন সৌদি আরব প্রবাসী। সাড়ে তিন মাস আগে তিনি বাড়িতে আসেন। এর পর থেকে বাবা-মাকে মোটরসাইকেল কেনার দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। রাজি হচ্ছিলেন না মা-বাবা। চাপের মুখে অবশেষে টাকা দিতে বাধ্য হন মা-বাবা।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা শহর থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে জাহিদুল একটি মোটরসাইকেল কেনেন। আজ বুধবার দুপুরে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রথম ঘুরতে বের হন। সঙ্গে ছিলেন দুই বন্ধু। বেলা পৌনে একটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন জাহিদুল। এ সময় অপর দুই বন্ধুও আহত হয়েছেন।

নিহত শাহ মো. জাহিদুল ইসলাম উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের শাহ মো. ফাইয়াজের বড় ছেলে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে জাহিদুল ইসলাম সৌদি আরবে যান। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাড়ি আসেন। বাড়িতে আসার পর থেকে মা-বাবাকে চাপ দিয়ে মোটরসাইকেল কিনেছিলেন গতকাল। পরদিনই সেই মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়েই হারালেন জীবন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জাহিদুল আজ দুপুরে দুই বন্ধুকে নিয়ে নতুন কেনা মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন। সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে যাচ্ছিলেন তাঁরা। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন জাহিদুল। বেলা পৌনে একটার দিকে সরাইলের কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকায় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে অতিক্রম করার সময় সড়কের পাশে পড়ে যায় মোটরসাইকেলটি। এতে জাহিদুল ইসলাম মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তাঁকে উদ্ধার করে জেলা সদরে নেওয়ার পথে মারা যান। তাঁর সঙ্গে থাকা দুই বন্ধু সামান্য আহত হন। তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

জাহিদুলের বাবা শাহ মো. ফাইয়াজ আহাজারি করে আজ ও কালকে বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশ থেকে চলে আসছে মোটরসাইকেল কেনার জন্য। তিন মাস ধরে সে মোটরসাইকেলের জন্য চাপ দিতে থাকে। বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার টাকা দিয়েছি। মোটরসাইকেল কিনে এক দিনও পার করতে পারল না। আমার বুক খালি করে চলে গেল। আমি বলব, কোনো বাবা যেন তাঁর অল্প বয়সের ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে না দেন। আমি যদি মোটরসাইকেল কিনে না দিতাম, আজ ছেলে হারাতাম না। কেউ এ কাজ করবেন না।’

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘মোটরসাইকেলে তিনজন ছিলেন বলে জেনেছি। আরোহী কারও মাখায় হেলমেট ছিল না। বেপরোয়াভাবে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে অতিক্রম করতে গিয়ে সড়কের পাশের ব্লকে পড়ে যান। এতে জাহিদুলের মাথায় আঘাত লাগে। এ আঘাতেই মারা গেছেন। লাশ পরিবারের জিম্মায় রয়েছে। মোটরসাইকেলটি পরিবারের লোকজন সড়ক থেকে তুলে নিয়ে গেছেন।’
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়