মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১

নেত্রকোণা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:১৯, ৮ জুন ২০২৪

আপডেট: ০৭:৩৭, ৯ জুন ২০২৪

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোনায় বাড়ি ঘিরে পুলিশের অভিযান

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোনায় বাড়ি ঘিরে পুলিশের অভিযান

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোণা সদর উপজেলায় একটি বাড়ি ঘিরে অভিযান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। শনিবার বেলা ১টা থেকে উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামে মাছের খামারটি ঘিরে অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান।

তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চারদিক থেকে খামারটি ঘিরে রেখেছে।”

নেত্রকোণা জেলা শহর থেকে ভাসাপাড়া গ্রামটি প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল। তবে গ্রামটি একটি প্রান্তে নিরিবিলি পরিবেশে মৎস্য খামারটি অবস্থিত। এর পাশে হাওর রয়েছে।

বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খামারটির ফটক বন্ধ। চারদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে। গ্রামের উৎসুক লোকজনও রয়েছে। খামারের ভেতরে একটি দোতলা বাড়ি এবং তার পাশে আরেকটি টিন শেড ঘর রয়েছে। বাড়িটি চারদিক থেকে বাউন্ডারি করা। ভেতরে প্রচুর গাছপালা রয়েছে। বাড়ির দুই পাশেই খালি ধানের ক্ষেত। সামনে দিয়ে রাস্তা গেছে।

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ বাড়িটির সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

এ সময় তিনি বলেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই বাড়িটি নজরদারিতে আনা হয়। এর অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার বাড়িটিতে একদফা অভিযানও চালানো হয়েছে। সেখান থেকে একটি পিস্তল, ১৭টি গুলি ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।

“আজ ময়মনসিংহ থেকে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা এখানে এসে পৌঁছেছেন। তারা এরই মধ্যে ভিতরে প্রবেশে করেছেন এবং সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে।

পুলিশ সুপার বলেন, “প্রাথমিক তথ্যে মনে হচ্ছে, জঙ্গিরা এই জায়গাটিকে তাদের প্রশিক্ষণের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করত। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।”

পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদ উল্লাহ চৌধুরীসহ সাত সদস্য এই অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খামার থেকে বেরিয়ে আসাদ উল্লাহ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি একটি প্রশিক্ষণ শিবির। তবে, ভেতরে কেউ নেই। হয়তো যারা ছিলেন, তারা পালিয়ে গেছেন।

কেন প্রশিক্ষণ শিবির মনে হচ্ছে জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “ভেতরে আমরা ব্যায়াম করার কিছু জিনিসপত্র পেয়েছি।”

অপর এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, “বোমা তৈরির কোনো সরঞ্জাম বা আলামত এখনও আমরা পাইনি। তবে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই বাড়িটির মালিক গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল মান্নান। তিনি প্রায় ২৫ বছর আগে এই দোতলা বাড়িটি তৈরি করেন। তবে বাড়িটি ভাড়া দেন আট বছর আগে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, বাড়ির ফটক প্রায় সবসময় বন্ধই থাকত। মাঝে মাঝে অপরিচিত এক-দুজন লোক সেখান থেকে বের হতেন।

এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরই মধ্যে ঢাকা থেকে বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা রওনা হয়েছেন। তারা রাতেই এসে পৌঁছাবেন।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়