মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:১৪, ৬ মার্চ ২০২৪

আপডেট: ১১:১৫, ৬ মার্চ ২০২৪

ছাত্রজীবনে ছিলেন ক্যাডার, শিক্ষক হয়েও থেকে গেছে অস্ত্রের নেশা

ছাত্রজীবনে ছিলেন ক্যাডার, শিক্ষক হয়েও থেকে গেছে অস্ত্রের নেশা

ছাত্রকে গুলি করে দেশব্যাপী আলোচিত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ। এরপর তাঁর ব্যাগ তল্লাশি করে দুটি অবৈধ পিস্তল, ৮১টি গুলি ও ১০টি চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

অস্ত্রের নেশা ছিল তাঁর অনেক পুরোনো। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়ালেখার সময়ই তিনি ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিলেন। বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষক হয়েও হাতে থাকত অস্ত্র ও ছুরি। এ ছাড়া এ প্রভাষকের বিরুদ্ধে রয়েছে যৌন হয়রানি, মাদক সেবনসহ নানা গুরুতর অভিযোগ। 

হত্যার চেষ্টা এবং অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে গত সোমবার রাতে সিরাজগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর বাবা বগুড়ার জেলা সদরের ধানসিঁড়ি নাটাইল গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য আবদুল্লাহ আল আমিন ছেলেকে হত্যার চেষ্টা এবং ডিবির উপপরিদর্শক ওয়াদুত আলী বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা দুটি করেন। 

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম বেল্লাল হুসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক। জবানবন্দিতে অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে জানান ডিবির ওসি জুলহাজ উদ্দিন। এখন সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে আছেন তিনি।

ডিবির ওসি আরও জানান, শিক্ষক রায়হান শরীফের ব্যাগ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, একটি গুলির খোসা, চারটি ম্যাগাজিন, দুটি বিদেশি কাতানা (ছোরা) ও ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।

আড়াই লাখ টাকায় কিনেছিলেন দুই অস্ত্র

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল জানান, তাঁর কাছ থেকে জব্দকৃত দুই পিস্তলই অবৈধ। তিনি কীভাবে অস্ত্র দুটি কিনলেন, সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। বিষয়টির তদন্ত চলছে। তাঁকে দেখে আপাতত সাইকো বলেই মনে হচ্ছে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, মাস তিনেক আগে প্রথমে সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ বোরের একটি নতুন অস্ত্র কেনেন ওই শিক্ষক। এর কয়েক দিন পর একই ব্র্যান্ডের আরেকটি অস্ত্র কিনেছেন। দুটি অস্ত্র কেনায় তাঁর ব্যয় হয় আড়াই লাখ টাকা। অবৈধ অস্ত্রের কারবারের সঙ্গে জড়িত একটি গ্রুপের কাছ থেকেই তিনি অস্ত্র ও ৮১ রাউন্ড গুলি কেনেন। প্রতি গুলির পেছনে তাঁর খরচ হয় ২ হাজার টাকা।  

কেন অস্ত্র কিনেছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে ওই শিক্ষক পুলিশকে জানান, অস্ত্র-গুলি সংগ্রহ করাই ছিল তার নেশা। প্রয়োজন হলে কাউকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য ছিল তাঁর। এমনকি সাত-আট বছর ধরে ইয়াবাসহ মাদক সেবন করতেন শিক্ষক রায়হান শরীফ। এ ছাড়া বাজার থেকে কিনেছেন ১২টি বিদেশি চাকু। 

কেনো ওই ছাত্রকে গুলি করতে গেলেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রায়হান শরীফ শিক্ষক হিসেবে ওই ছাত্রকে প্রশ্ন করায় ছাত্রটি হাসাহাসি শুরু করেন। এরপর আর রাগ ধরে রাখতে পারেননি। 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়