ভিসি হতে চান ৫০০ শিক্ষক, বিস্মিত শিক্ষা উপদেষ্টা
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেকের সভার সিদ্ধান্ত জানাতে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এই সময় মোবাইল ফোনে এল একটি কল।
রিং টোনের শব্দে উপদেষ্টা ফোনটি ধরলেন না। তবে তিনি যে বিরক্ত তা বোঝা গেল প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে করা স্বগতোক্তিতে।
ওয়াহিদউদ্দিন বলতে থাকলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের এত শিক্ষক (৩০০-৪০০-৫০০ শিক্ষক) সবাই কেন এত ভিসি হতে চায়, আমি বুঝি না।”
এসময় নিজের কথাও তুলে ধরে বলেন, “আমি তো কখনও ভিসি হতে চাইইনি। শত শত ভিসি হতে চান, প্রো-ভিসি হতে চান, ইনারা পড়াতে চান না কেন। বুঝতে পারছি না আমি।”
একনেকের এই বৈঠকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর ও টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেইন করতে ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি চট্টগ্রামের কালুরঘাটে সড়ক কাম রেলসেতুসহ চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন পরিকল্পনার পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও আছেন। সেই মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রকল্প এই বৈঠকে অনুমোদন হয়নি। তবে সেই ফোনের কারণেই সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি আসে আলোচনায়।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য থেকে শুরু করে প্রশাসনের শীর্ষ পদের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সরিয়ে দেওয়া হয় অথবা তারা নিজেরাই সরে যান। সেসব পদে পুনর্নিয়োগের কাজ গত দুই মাসেও শেষ হয়নি।
শিক্ষা উপদেষ্টা এর আগেও এসব পদের বিপরীতে তদবির পাওয়ার কথা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। তবে একনেক বৈঠকের পর ফোন পেয়ে এ বিষয়ে আর কথা বাড়াননি তিনি।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা এরপর প্রসঙ্গ পাল্টে অর্থনীতি, দুর্নীতি বিষয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “গ্রামাঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির বলব না, যতদূর জানি, আমাদের কাছে তো ঠিক পরিসংখ্যান নেই যে আরেকটু সচল হওয়া দরকার আরও যদি কর্মসংস্থান তৈরি করতে হয়। এমনিতেই কর্মসংস্থানের অভাব।
“তার ওপর আছে যে, দুর্নীতিরও তো একটা অর্থনীতি আছে। আমি যদি একটা.. অনেকগুলো তোরণ তৈরি করি, এবং অনেক বাসে করে লোক আনি, সেগুলোতেও তো অর্থের একটা প্রবাহ হয়। পৃষ্ঠপোষকতার যে রাজনীতি, যে টেন্ডারের রাজনীতি সেগুলোতেও টাকার লেনদেন হয়।”
এসব অর্থনীতি আবার চালু করা ‘উচিত’ নয় জানিয়ে বলেন, “এগুলো আপাতত বোধহয়… আমি জানি না, কমেছে নিশ্চয়ই। চাঁদাবাজি কম বোধহয় অত কমেনি।
“কিন্তু অন্যান্য যেসব খরচ, অপচয় বলব আমি, অপরাজনীতির অপচয় এগুলো, এগুলো তো সাময়িকভাবে সামগ্রিক অর্থনীতিতে অর্থ প্রবাহ তৈরি করে। কারও কারও সেটা টাকারও আয় হয়। সেই কারণেও কারও অসুবিধা হয়।
“আমি বলছি না, সেটা আবার চালু করা উচিত হবে। ফলে আমাদের দ্রুত কিছু প্রকল্প শুরু করতে হবে। চলতি প্রকল্প যেগুলো আছে সেগুলো সামনের দিকে আরও এগিয়ে নিতে হবে পরিমার্জন করে, সংশোধন করে।”