বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:১৪, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

গতি ফিরেছে তিন বিসিএসে

গতি ফিরেছে তিন বিসিএসে

চার মাস স্থবির থাকার পর বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কার্যক্রমে গতি ফিরেছে। পুনর্গঠিত কমিশন এরই মধ্যে একটি নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে।

স্থগিত হওয়া ৪৪তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) মৌখিক পরীক্ষা নতুন করে নেওয়ার এবং ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফলাফল নতুন করে প্রকাশ করা হবে। গতকাল সোমবার রাতে বিজ্ঞপ্তিতে এসব সিদ্ধান্ত জানিয়েছে পিএসসি।

বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি জানায়, ৪৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব প্রার্থীর (১১ হাজার ৭৩২ জন) মৌখিক পরীক্ষা আবার নেওয়া হবে। বিগত কমিশন ৩ হাজার ৯৩০ প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছিল। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠানো হবে। ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় নির্বাচিত (১০ হাজার ৬৩৮ জন) প্রার্থীদের সঙ্গে আরও সমসংখ্যক প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে আবার ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

পিএসসির সূত্র বলছে, বিসিএস পরীক্ষা ছাড়াও নন-ক্যাডার নিয়োগ পরীক্ষা ও সিভিল সার্ভিসভুক্ত অর্ধবার্ষিক বিভাগীয় পরীক্ষাসহ অন্যান্য কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে। ৩০ নভেম্বর অথবা এর আগে ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এই বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ৩ হাজার ৪৬০ শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাস থেকে পিএসসির কার্যক্রমে গতি ফিরেছে। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে পুনর্গঠিত কমিশন ১৩ নভেম্বর নন-ক্যাডার সিনিয়র স্টাফ নার্স পদের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে গত রোববার পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম বলেন, ‘এতটুকু বলতে পারি, শিগগির সব কার্যক্রম শুরু হবে।’

জানা যায়, গত ৮ জুলাই পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত একাধিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পিএসসি। সেই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পায়নি কমিশন। অভিযোগ ওঠার পর কোনো বিসিএসের ফলাফল প্রকাশ বা পরীক্ষা হয়নি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ২৫ আগস্ট ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা এবং ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল আটকে আছে দীর্ঘদিন। এর মধ্যে ৪৪তম বিসিএসের মাধ্যমে ১ হাজার ৭১০ জনকে, ৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে ২ হাজার ৩০৯ জনকে এবং ৪৬তম বিসিএসের মাধ্যমে ৩ হাজার ১৪০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ক্যাডারভুক্ত ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের অর্ধবার্ষিক বিভাগীয় পরীক্ষা স্থগিত করে পিএসসি।

পিএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন ও কমিশনের ১২ জন সদস্য ৮ অক্টোবর পদত্যাগ করেন। পরদিন পিএসসির চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেমকে নিয়োগ দেয় সরকার। একই সঙ্গে আট সদস্যকেও নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন ডা. মো. আমিনুল ইসলাম, মো. সুজায়েত উল্যা, ড. নূরুল কাদির, ড. মো. নাজমুল আমীন মজুমদার, মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, এ এস এম গোলাম হাফিজ, অধ্যাপক ড. এম সোহেল রহমান, ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি পদ শূন্য রয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রথম শ্রেণির পদ ৪৩ হাজার ৩৩৬টি এবং দ্বিতীয় শ্রেণির ৪০ হাজার ৫৬১টি। বাকিগুলো তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি।

৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ: এদিকে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে গতকাল নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এ-সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) অভিযোগ তদন্ত করতে বলা হয়েছে।

২৪ পরীক্ষার্থী গত মাসে রিটটি করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ নাভিলা কাশফি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়