বয়স থাকলেই বিসিএস: পিএসসি
একজন চাকরিপ্রার্থীর আবেদনের বয়স থাকা পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে চায় পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। এ জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব অনুমোদন হলে ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণর সুযোগ পাবেন চাকরিপ্রার্থীরা। পিএসসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
১ ডিসেম্বর আবেদনকারীর বয়স, মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ও আবেদন ফি কমানোসংক্রান্ত পৃথক প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি। এতে স্বাক্ষর করেছেন পিএসসি সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া।
প্রস্তাবের তথ্যমতে, পিএসসি মনে করে, একজন চাকরিপ্রার্থীর বিসিএসে চারবার অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির [অনুচ্ছেদের ১৯ (১), ১৯ (২)] সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একই সঙ্গে তা নাগরিকের মৌলিক অধিকারেরও [অনুচ্ছেদ ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ (১), (২) ধারা] পরিপন্থী। ওই দুই অনুচ্ছেদে সুযোগের সমতা, মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্য আইন বাতিল, আইনের দৃষ্টিতে সমতা, ধর্ম প্রভৃতি কারণে বৈষম্য ও সরকারি নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ বর্ণনা রয়েছে।
এ বিষয়ে পিএসসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত একজন প্রার্থী চারবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে এটি সংবিধানের বিভিন্ন দফার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই এসব বিষয় উল্লেখ করে প্রার্থীদের চাকরির আবেদনের বয়সসীমা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুযোগ দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিসিএস পরীক্ষায় একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ চারবার অংশ নিতে পারবেন। তার আগে গত ২৪ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সর্বোচ্চ তিনবার বিসিএস দেওয়া যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। আর ১৮ নভেম্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩২ বছর নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
পিএসসি থেকে পাঠানো আরেক প্রস্তাবে বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করার কথা বলা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা থেকে কার্যকর করতে চায় পিএসসি। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, লিখিত পরীক্ষার ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়ার জন্য মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০-এর পরিবর্তে ১০০ নম্বর এবং সর্বমোট ১১০০-এর পরিবর্তে ১০০০ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরেক প্রস্তাবে বিসিএসের আবেদন ফি অর্ধেক করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন ফি ৭০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩৫০ টাকা এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা করার সিদ্ধান্ত হলো।
গত ২৮ নভেম্বর ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এতে আবেদন ফি ৭০০ টাকা উল্লেখ করা হলে এ নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে ওই দিনই আবেদন ফি কমানোর ঘোষণা দেয় পিএসসি।