নিজ বাসা থেকে বাবাসহ নারী চিকিৎসককে অপহরণ
রাজশাহী নগরে নিজ বাসা থেকে একজন নারী চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে অপহরণকারীরা ওই চিকিৎসকের বাবাকেও তুলে নিয়ে যান। পরে তাঁরা সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় রাস্তায় চিকিৎসকের বাবাকে ফেলে চলে যান। তিনি এখন সলঙ্গা থানায় পুলিশের হেফাজতে। অপহরণকারীরা ওই চিকিৎসকের মাকে (৫১) পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন। পরে খবর পেয়ে স্বজনেরা তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অপহরণের শিকার ওই চিকিৎসক রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) শেষ করেছেন। তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাঁদের বাসা রাজশাহী নগরে।
অপহরণকারীদের হামলায় চিকিৎসকের মা গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁর সঙ্গে আজ বেলা একটার দিকে কথা হয়। তিনি জানান, আজ ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য তাঁর স্বামী মসজিদে যান। এ সময় তিনি বাইরের ফটকে তালা লাগিয়ে চাবি সঙ্গে নিয়ে যান। একটু পরেই তালা খোলার শব্দ পেয়ে তিনি এগিয়ে যান, এত তাড়াতাড়ি নামাজ না পড়ে ফিরে আসছেন কি না, তা দেখতে। দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অপহরণকারীরা তাঁর স্বামীকে জিম্মি করে চাবি নিয়ে এসেছেন। এ সময় অপহরণকারীরা তাঁকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেন। মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করেন। এরপর তাঁরা তাঁর গলা চেপে ধরেন। তাঁরা যখন তাঁকে ছেড়ে দেন, তখন তিনি দৌড় দিয়ে নিচে নেমে রাস্তার ওপর পড়ে যান। ততক্ষণে অপহরণকারীরা তাঁর মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে চলে যান। পরে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকা থেকে তাঁর স্বামীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তিনি জানান, একটি মাইক্রোবাসে করে তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। চালকসহ অপহরণকারীরা ছয়জন ছিলেন। তাঁকে মাইক্রোবাসে তোলার পরেই মুখ বেঁধে ইনজেকশন দেওয়া হয়। পরে তাঁর চেতনা ফিরে এলে তাঁকে মহাসড়কের পাশে ফেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।
চিকিৎসকের মা হাসপাতালে বলেন, এখন পর্যন্ত মেয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিনি বারবার বলছিলেন, ‘আমার মেয়েটাকে ভিক্ষা চাই।’
সলঙ্গা থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শফিউল ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টার দিকে সলঙ্গা থানাধীন ভেংড়ি এলাকার লোকজন তাঁকে (চিকিৎসকের বাবা) উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। একই মাইক্রোবাসে বাবা ও মেয়েকে অপহরণকারীরা তুলে নিয়ে এসেছিলেন। তাঁরা মেয়েকে নিয়ে গেছেন। রাজশাহী থেকে ওই ব্যক্তির আত্মীয়স্বজন এসেছেন। তাঁদের কাছে তাঁকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আর তাঁরা রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানায় এ বিষয়ে মামলার একটা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিয়ার রহমান বেলা আড়াইটার দিকে বলেন, অপহরণের বিষয়ে এ ধরনের একটা বার্তা তাঁরা পেয়েছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় কাউকে আটকও করা হয়নি।