রোববার   ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ , ২১ পৌষ ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ২ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ২২:৩৯, ২ জানুয়ারি ২০২৫

জজ আদালতেও নাকচ চিন্ময়ের জামিন আবেদন

জজ আদালতেও নাকচ চিন্ময়ের জামিন আবেদন

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন জজ আদালতেও নাকচ হয়েছে।

তার জামিনের জন্য তার আইনজীবীরা গত ডিসেম্বরে যে আবেদন করেছিলেন, তার ওপর শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পিপি মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, “শুনানি হয়েছে। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।”

চিন্ময়কে এদিন আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালতে আইনজীবীর উপস্থিতিতে আসামির ভার্চুয়াল হাজিরায় জামিন শুনানি হয়।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি জানিয়ে বলেছে, এটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, এর সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। কেউ সংক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে যাবার সুযোগ রয়েছে৷ “

চিন্ময় দাশের আইনজীবী অপূর্ব ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, “জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।”

এর আগে ২৬ নভেম্বর জামিন নাকচ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম কাজী শরীফুল ইসলাম।

ওই আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।

বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।

জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর সেদিনই চিন্ময় দাশের আইনজীবীরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন চেয়ে আবার জামিন আবেদন করেছিলেন। তবে সেদিন আর শুনানি হয়নি।

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আট দফা দাবিতে সনাতনী সম্প্রদায়ের মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন চট্টগ্রামের ইসকন পরিচালিত মন্দির পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রক্ষচারী।

গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে জনসভার পর ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়, সেখানে চিন্ময় দাশকেও আসামি করা হয়।

মামলা হওয়ার এক মাসের মাথায় ২৫ নভেম্বর বিকালে ঢাকার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে জানানো হয়, কোতোয়ালি থানার ওই মামলায় চিন্ময় দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর প্রতিবাদে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খুলনা, দিনাজপুর, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে।

চিন্ময় দাশকে সেদিন রাতেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়। পরদিন আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় কারাগারে।

২৬ নভেম্বর আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাংচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। ওই তিন মামলায় মোট ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো মোট ১৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার ঘটনায় তারা বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পাশাপাশি আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে যানবাহন ভাংচুর ও জনসাধারণের ওপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন নগরীর কোতোয়ালি থানায়।

এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়