নোট-গাইডের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’, প্রশ্নকাঠামোতেও পরিবর্তন আনা হবে: এনসিটিবি চেয়ারম্যান
নোট-গাইড বইয়ের বিরুদ্ধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান।
বিগত কয়েক বছরে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি নোট-গাইড নির্ভর হয়েছে বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, যা একদিকে অভিভাবকদের খরচ বাড়াচ্ছে অপরদিকে শিক্ষার কাঙিক্ষত উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নোট-গাইড ‘শিক্ষার মূল্য উদ্দেশ্য সাধনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে’ মন্তব্য করে রিয়াজুল হাসান বলেন, “নোট-গাইডের ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স। নোট-গাইড ছাপানো বন্ধ করার বিষয়ে সরকারও কঠোর। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি নোট-গাইডের ব্যপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে নোট-গাইডের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য। ইতোমধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিযান পরিচালিতও হচ্ছে।”
নোট-গাইডের ‘দৌরাত্ম্য’ ঠেকাতে পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু পুনর্গঠন ও গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করার কথা বলছেন অধ্যাপক রিয়াজুল।
তিনি বলেন, “নোট-গাইড বন্ধ করার বিষয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা হল, পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু পুনর্গঠন করতে হবে, এমনভাবে করতে হবে যাতে বিভিন্ন প্রকারের প্রশ্ন সেখান থেকে করা যায়। প্রশ্ন এমনভাবে করতে হবে যেন তা কমন না পড়ে। সুতরাং প্রশ্নকাঠামোতেও পরিবর্তন আনতে হবে। আইইএলটিএস ও জিআরই পরীক্ষাতেও অনেকেই সহায়ক বইয়ের সহায়তা নেয় কিন্তু সেখানে হুবহু প্রশ্ন আসে না। এই মেথডে যদি আমরা প্রশ্ন করতে পারি, তাহলে বৈচিত্রময় প্রশ্ন তৈরি করা সম্ভব আর। তখন দেখা যাবে প্রশ্ন যখন কমন পড়বে না তখন নোট গাইডের নির্ভরশীলতা কমে গিয়ে পাঠ্যবই প্রাধান্য পাবে।”
গণস্বাক্ষরতা অভিযানের গবেষণা প্রতিবেদন ‘এডুকেশন ওয়াচ রিপোর্ট ২০২৩’ অনুসারে, প্রাথমিক পর্যায়ের ৯২ ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের পাঠ ও পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গাইড বই অনুসরণ করেছে।
আর ‘এডুকেশন ওয়াচ রিপোর্ট ২০২২’ বলছে, প্রাথমিক পর্যায়ের ৭৯ শতাংশ ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী নোট-গাইড অনুসরণ করেছিল।
এ দুই প্রতিবেদনেই শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধির ‘অন্যতম’ কারণ হিসাবে দায়ী করা হয়েছে নোট-গাইডকে।