চালের দাম এখনও চড়া
বাজারে শীতকালীন সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ ভোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি দিলেও চালের বাজার আগের মত চড়াই রয়ে গেছে। কৃষকের আমন ধান ঘরে তোলা কিংবা ভারত থেকে আমদানির খবরও চালের বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে পারেনি।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট ও টাউন হল ঘুরে দেখা যায়, খুচরায় মানভেদে নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। গত সপ্তাহেও এই চালের দাম ছিল ৭৮ থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে।
অন্যান্য চালের মধ্যে ‘স্বর্ণা’ ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা, ‘শম্পা’ ৭৩ থেকে ৭৪ টাকা এবং মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। গেল সপ্তাহে এসব চালের দাম ছিল ৩ থেকে ৫ টাকা কম।
গত মঙ্গলবার ভারত থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি চাল কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, চাল আমদানির এই খবর বাজারে ইতিবাচক কোনো প্রভাব ফেলেনি।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের বিক্রেতা সাত্তার বলেন, “চালের দাম গত সপ্তাহে বরং কিছুটা কম ছিল।”
সাত্তারের দোকানে চাল কিনতে আসা নুরজাহান বেগম বলেন, “চালের দাম কেজিতে ৫ টাকার ওপর বেড়েছে। কারণ গত সপ্তাহে আমি প্রতিকেজি নাজিরশাইল কিনেছিলাম ৭৮ টাকায়। এখন ৮০ টাকা চাচ্ছে।”
সবজি পর্যাপ্ত, দামও কম
শুক্রবার ছুটির দিন রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোয় সবজির দাম কম ছিল। বড় আকারের প্রতিটি ফুলকপি বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ টাকায়। ২০ টাকায় মিলছে বাঁধাকপি।
লম্বা আকৃতির বেগুনের কেজি ৪০ টাকা; আর গোল বেগুন মিলছে ৫০ টাকায়।
দাম আরও কিছুটা কমে টমেটোর কেজি দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়। শালগম ৩০ টাকা ও ঝিঙা কেনা যাচ্ছে ৬০ টাকায়। পেঁয়াজের ফুলের আঁটির দাম বরাবরের মত ১০ টাকাই আছে।
এছাড়া প্রতিকেজি মুলা ২০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, শিম ৩০ টাকা, নতুন আলু ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি কিনতে আসা জায়েদি হোসেন বলেন, “ডিসেম্বরের শুরুতে সবজির বাজার চড়া ছিল। শিমের কেজি ছিল ৯০ টাকা। এটা একটা স্বস্তি যে সবজির দাম কমেছে।”
মাছের দাম কমছে, মাংস আগের মতই
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মাছের দাম তুলনামূলক কম ছিল। আগের সপ্তাহে যেসব মাছ ১৭০-২০০ টাকা কেজি ছিল, শুক্রবার সেগুলো ছিল ১৫০ টাকায়।
এদিন বাজারে পাঙাশ-তেলাপিয়া ‘মধ্য’ ও ‘নিম্নবিত্ত’ ক্রেতাদের নাগালেই ছিল। তবে ক্রেতারা বলছেন মাছের দাম আরও কমা উচিত।
মাছ কিনতে আসা ইকরাম কবির ‘হুটহাট’ দাম বেড়ে যাওয়ার সমালোচনা করে বলেন, “মাছের দাম আজ একটু কম। তবে এই দামও আমাদের মত পরিবারের জন্য অনেক বেশি। মাছের দাম আরও কমা উচিত।”
এদিন বাজারে কাচকি মাছ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। পাঙাশ ও তেলাপিয়া বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহেও ছিল ২০০ টাকা।
শিং মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি।মাঝারি ও বড় ধরনের রুই মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকায়। আর ছোট আকারের রুই মাছ ছিল ২৮৫ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।
এছাড়া পাবদা ৩০০, কার্প ২২০-২৪০, সরপুঁটি ২০০, চিংড়ি ৮০০, মলা মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গরুর মাংস আগের সপ্তাহের মতই ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হয়। খাসির মাংসের কেজিও ১০৫০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে রয়েছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। দেশি মুরগি ৬৫০ টাকায় এবং প্রতিকেজি ‘সোনালি’র দাম ৩৫০ টাকা।