বুধবার   ২২ জানুয়ারি ২০২৫ , ৮ মাঘ ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩৩, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৯:৫০, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে: ফখরুল

নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে: ফখরুল

দ্রুত নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কেন দ্রুত জাতীয় নির্বাচন চান তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “নির্বাচনটা হলে আমাদের যে শক্তি সেই শক্তি হবে বৃহৎ। সরকার থাকবে, পার্লামেন্ট থাকবে অনেক কিছু শক্তিশালী হবে। যে সংকটগুলো সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো দূর হয়ে যাবে।”

শনিবার দুপুরে আমার বাংলাদেশ পার্টি- এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেছেন।

সংস্কারের আগে বিএনপি নির্বাচনের জন্য অস্থির হয়ে গেছে, কারো কারো এমন মন্তব্যের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা সংস্কারের কথা আগেই বলেছি, আবারও বলছি যে, আমরা সংস্কার চাই।

“কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা একটা ভুল বুঝানোর চেষ্টা করেন যে, আমরা সংস্কারের আগে নির্বাচন চাই। নির্বাচনের জন্য অস্থির হয়ে গেছি। বিষয়টা কিন্তু সেটা না।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ‘অতিপ্রয়োজনীয়’ সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা এ কথাও বলেছি যে, নির্বাচনের পরে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতীয় সরকার করতে চাই, সবাই মিলে রাষ্ট্রের সকল সমস্যার সমাধান আমরা করতে চাই। যারা আমাদের দলে আছেন, অন্যান্য যেসব দল আছেন তারা এটা ভাববেন, চিন্তা করবেন।”

অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “নির্বাচনে মাধ্যমে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।”

নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে ধৈর্য্য ধরতে এবং হঠকারিতা করে ভুল কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “দেশের অবস্থা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে খুব ভালো না, রাজনৈতিক দিক দিয়ে ভঙ্গুর অবস্থা হয়ে আছে। আমরা সবাই মিলে এই সমস্যার সমাধান করতে চাই।

“সবাই মিলে এক সাথে হয়ে আমরা সেই দানবকে ফ্যাসিস্টকে সরাতে পেরেছি তাহলে আমরা কেনো পারব না আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থে নতুন সম্ভাবনার একটা নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ করতে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এখানে আমাদের কোনো বিভেদ নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশের কিছু মানুষ তারা আজকে বিভিন্নভাবে এই ঐক্যে কিছু ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছেন। আমি জানি, সেই চেষ্টা সফল হবে না।” ঐক্যবদ্ধভাবে লক্ষ্য পৌঁছাতে সক্ষম হবেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা একটা ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। আজকে একটা পরিবেশ এসেছে, যে পরিবেশে আমরা নতুন করে বাংলাদেশকে নির্মাণ করার স্বপ্ন দেখছি, কথা বলছি। আমরা যেন এই পরিবেশটা, এই স্বপ্নটা নষ্ট করে না দিই।”

নতুন করে বাংলাদেশকে নির্মাণের সিদ্ধান্তে অটল থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই, আমরা বৈষম্য দূর করতে চাই, আমরা বাংলাদেশে সেই তরুণদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।”

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবি পার্টির প্রথম জাতীয় কাউন্সিল হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও কয়েকটি দেশের কুটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

কাউন্সিলে দলটির জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময়ের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্মাণ করা প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং আহত ছাত্ররাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

সেখানে কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামানসহ নির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দের নাম ঘোষণা করা হয়।

নতুন নেতৃত্বকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান মির্জা ফখরুল।

২০২০ সালের ২ মে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এই তিন মূলনীতির ভিত্তিতে এবি পার্টির যাত্রা শুরু হয়।

এবি পার্টির আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবদুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঞ্চালনায় জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশন হয়।

সেখানে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী আন্দোলনের আশরাফ আলী আকন্দ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার রাশেদ প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়