সমাধান ছাড়াই বৈঠক থেকে বেরিয়ে গেলেন রেলের রানিং স্টাফরা
কর্মবিরতির কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে আন্দোলনরত রেলের রানিং স্টাফ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তবে কোনো সমাধান ছাড়াই ওই বৈঠক থেকে বেরিয়ে গেছেন রানিং স্টাফ নেতারা।
রানিং স্টাফদের নিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে কমলাপুর রেলস্টেশনে বৈঠকে বসেছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। কিন্তু বৈঠকে কোনো সমাধান না হওয়ায় রানিং স্টাফরা বেরিয়ে যান।
বেলা দেড়টার দিকে কমলাপুর স্টেশনের ভিআইপি কক্ষে এই বৈঠক শুরু হয়। বেলা ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রানিং স্টাফদের প্রতিনিধি সাইদুর রহমান সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘক্ষণ রেলসচিব, মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তবে কোনো সিদ্ধান্তে আমরা পৌঁছাতে পারিনি বলে ওই বৈঠক চলাকালীনই আমি চলে আসছি। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যাঁরা আছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করব। তবে আমরা আমাদের কর্মবিরতিতে অনড় আছি।’
এর আগে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরাসরি কোনো যোগাযোগ হচ্ছে না। তাদের সঙ্গে পরোক্ষভাবে (ইনডিরেক্টলি) যোগাযোগ হচ্ছে। তখন ফাহিমুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘আমাদের আলোচনার দ্বার খোলা আছে। তারা আসলে তাদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যেকোনো সময় ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।’
কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে অচলাবস্থার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কি না, এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, অর্থ বিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ রকম একটা মুহূর্তে তারা তো কিছু বলতে পারছে না। এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ আছে। উপদেষ্টা বলেছেন আলোচনা করবেন, সেখানে তাঁরা অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি নিয়ে যাবেন।
মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে গেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে ওঠেননি রানিং স্টাফরা। ফলে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। ফলে সারা দেশে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। রানিং স্টাফের মধ্যে রয়েছেন ট্রেনচালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা।
রানিং স্টাফদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিষয়ে আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। আমরা বলেছি, আমাদের আলোচনার দ্বার খুলে রেখেছি। সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী করবে, সেটা বলতে পারি না। তারা যদি না আসে, তাহলে তো আমাদের হাতে নাই ব্যাপারটা। সব সময় সব ব্যাপার কিন্তু রেল মন্ত্রণালয়ের হাতে নিয়ন্ত্রণ থাকে না।’
রানিং স্টাফদের দাবি যৌক্তিক কি না, এ প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘তাদের দাবি যৌক্তিক মনে করেই আলোচনা করেছি। এটার জন্য আমরা কিছুটা অর্জন করেছি। ওরা চার বছর ধরে আন্দোলন করছে। আমরা একটা অর্জন নিয়ে এসেছি যৌক্তিক মনে করেই।’