বুধবার   ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:৪৭, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আখেরি মোনাজাতে শেষ হল বিশ্ব ইজতেমা

আখেরি মোনাজাতে শেষ হল বিশ্ব ইজতেমা

গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হল তাবলিগ জামাতের শুরায়ী নেজাম বা মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপ।

বুধবার দুপুরে এই আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা জুবায়ের আহমেদ। মোনাজাতে বিশ্বের মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য, শান্তি, কল্যাণ কামনা করা হয়।

বেলা ১২টার পর এ মোনাজাত শুরু হয়, চলে মিনিট বিশেক। বিশ্বের মুসলমানদের হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয় মোনাজাতে।

তাছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। মোনাজাত শেষে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় হেদায়েতি বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। এ বয়ানের পর নসিহত করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা।

মোনাজাতে অংশ নিতে বুধবার ফজরের নামাজের পর থেকেই ইজতেমা ময়দানের দিকে রওনা দেন আশপাশ এলাকার মানুষ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে তাদের স্রোত বাড়তে থাকে। ভোরের আলো ফোটার আগেই হাজার হাজার মানুষ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে আসেন।

ভোগড়া বাইপাস থেকে ইজতেমা মাঠ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেই অতিক্রম করেন অসংখ্য মানুষ। কারণ বিপুল জনসমাগমের কারণে যানবাহনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। মোনাজাতের আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

একপর্যায়ে ময়দানের আশপাশের অলিগলি, সড়ক, বাসাবাড়ি, কলকারখানার ছাদে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার ফ্লাইওভারের উপরে, টঙ্গী-ঘোড়াশাল ও কামারপাড়া সড়কে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। তুরাগ নদে নৌকায় বসে এবং আশেপাশে যানবাহনের ছাদে বসেও মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা যায় অনেকে।

বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শত শত নারী ইজতেমা ময়দানের আশপাশ, কলকারখানা ও বাসাবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। বিভিন্ন দেশের তাবলিগ জামাতের কয়েক হাজার বিদেশি মেহমান এবারের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেন।

সোমবার বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব, যাতে অংশ নেন ঢাকার একাংশ ও ২২ জেলার শুরায়ে নেজাম (জুবায়ের) অনুসারীরা।

এবার জুবায়েরপন্থিদের ইজতেমা হল দুই ধাপে। প্রথম ধাপের ইজতেমা শুরু হয় গত শুক্রবার ভোরে, রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সেই পর্বের শেষ হয়।

এরপর ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের ইজতেমা। আগামী বছর থেকে তারা আর টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা ও তাবলীগি কার্যক্রম করতে পারবেন না– এই শর্তে তাদের এবার ইজতেমা করার অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, বুধবার আখেরি মোনাজাতের পর ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ১১টি বিশেষ ট্রেন ও বাড়তি বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বনলতা, কক্সবাজার এক্সপ্রেস, সুবর্ণলতা, পর্যটক এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা-এই পাঁচটি বিশেষ ট্রেন ছাড়া টঙ্গি স্টেশনে সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি রাখা হয়েছে।

এবারের ইজতেমার দুই ধাপে মোট ৭ জন মারা গেছেন বয়স বা অসুস্থতাজনিত কারণে।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়