ভাঙা হল ইতিহাসের সাক্ষী শেখ মুজিবের বাড়ি, পোড়ানো হল হাসিনার সুধা সদন

শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের পাল্টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ‘বুলডোজার মিছিল’ নামে ভাঙচুরের যে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল, তা ছড়াল দেশের বিভিন্ন স্থানে।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে এক্সক্যাভেটর ও ক্রেন নিয়ে ভেঙে ফেলা হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি। ধানমণ্ডি ৫ নম্বরে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদন পুড়িয়ে দেওয়া হল।
ভাঙচুর করা হল ঢাকার বাইরে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, সিলেটে শেখ হাসিনার আত্মীয় এবং আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িসহ বিভিন্ন ভাস্কর্য।
এমন এক দিনে এই ঘটনাপ্রবাহ চলল, যেদিন গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার পতন ও দেশত্যাগের ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বুধবার রাত ৮টার পর থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জড়ো হয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনতার ভিড় বাড়তে থাকে।
এক পর্যায়ে জনতা গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। লাঠিসোঁটা ও শাবল হাতে ভাঙচুরে যোগ দেন অনেকে। কেউ কেউ বাড়ির দেয়াল ভাঙার চেষ্টা করেন। জানালার গ্রিল, কাঠ, ফটকের অংশ ভেঙে নিয়ে যেতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।
ভেতর থেকে ‘নারায়ে তাকবীর’, 'জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই কর' এসব স্লোগানের পাশাপাশি ‘দিল্লি না ঢাকা, আবু সাঈদ-মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘জনে জনে খবর দে, মুজিববাদের কবর দে’– ইত্যাদি স্লোগান শোনা যায় এ সময়।
এই ভিড়ের মধ্যে দর্শকের সংখ্যাও কম ছিল না। তারা বাড়ির সামনের পরিস্থিতি দেখছিলেন, মোবাইলে ছবি তুলছিলেন বা ভিডিও করছিলেন, আবার চলেও যাচ্ছিলেন।
৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার পতনের দিন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জড়িত এই বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছিল। বুধবার ব্যাপক ভাঙচুরের পর ভেতরে পোড়ার মত যা কিছু আছে, তাতে ফের আগুন দেওয়া হয়। এসময় নারিকেল গাছের পাতাও জ্বলতে দেখা যায়। আগুন জ্বলতে দেখা যায় ৩২ নম্বরের ওই বাড়ির পাশের একটি ভবনেও।
কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা একজন বলেন, “বুলডোজার দিয়ে আমরা আজ স্বৈরাচারের চিহ্ন মুছে দেব।”
ওই বাড়ি ঘিরে হাজার তিনেক মানুষের বিক্ষোভের মধ্যে রাত পৌনে ১১টার দিকে সেখানে একটি ক্রেন পৌঁছায়। মানুষের উল্লাসধ্বনির মধ্যে সেটি মূল সড়ক থেকে ৩২ নম্বরের সড়কে ঢোকে। ক্রেনে ওপরে উঠে স্লোগান দিতে থাকেন অনেকে। পরে আসে একটি এক্সক্যাভেটর।
রাত সোয়া ১১টার দিকে ক্রেন ও এক্সক্যাভেটর দিয়ে বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। ঘণ্টাখানের মধ্যে ভেঙে ফেলা হয় তিন তলা বাড়ির একটি অংশ। রাত সোয়া ১টার পর সেই কাজে কিছুটা বিরতি দেওয়া হয়। পরে আরো একটি এক্সক্যাভেটর ভাঙার কাজে যোগ দেয়।
এর আগে ৩২ নম্বর বাড়ির উল্টোপাশে খোলা জায়গায় প্রজেক্টরে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হচ্ছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ আয়োজন করে।
সেখানে মাইকে ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, “আমরা আন্দোলনের প্রামাণ্যচিত্র দেখাচ্ছি। আপনাদের যাদের ভাঙার আছে, তারা সামনে গিয়ে ভেঙে আসেন। এখানে যারা প্রামাণ্যচিত্র দেখতে চায়, তাদের সুযোগ দেন।”
এসব কর্মসূচির কারণে ধানমণ্ডি এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলা হলেও রাস্তার ওপর দুটো পুলিশ ভ্যান ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোনো অবস্থান ওই এলাকায় দেখা যায়নি।
মধ্যরাতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা একবার ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িটির সামনে গেলে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান তোলে ছাত্র-জনতা। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখান থেকে সরে যায় সেনাবাহিনী।
গভীর রাতে মাইকে গান ছেড়ে একদল মানুষকে সেখানে নাচতেও দেখা যায়। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে আসা লোকজনের ভিড়ে রাসেল স্কয়ার এলাকায় যান চলাচল অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। রাতে ঢাকায় ঢোকা ট্রাকের স্রোত যানজটে আটকে যায়। মিরপুর সড়কে যানবাহনের সারি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় পর্যন্ত পৌঁছায়।
সকাল ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙার কাজ চলছিল। তখনো সেখানে শ দুয়েক মানুষ ভিড় করে ছিলেন।
পুড়ল সুধা সদন
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এই পরিস্থিতি চলার মধ্যেই আগুন দেওয়া হয় ধানমন্ডি ৫ এ শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে আগুন দেওয়া হয়।
ধানমন্ডি সোসাইটির একজন নিরাপত্তা কর্মী বলেন, রাত সাড়ে ১০টা কি পৌনে ১১টার দিকে কয়েকজন তরুণ এসে তালাবন্ধ সুধাসদনে আগুন লাগিয়ে দেয়।
৫ অগাস্ট সুধাসদনে এক দফা হামলা হয়। এরপর সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে তালা মেরে যায়। বুধবার রাতে সেই তালা ভেঙে আগুন লাগানো হয়।
আগুন লাগানোর পর এর পাশের বাড়িটি থেকে আতঙ্কিত বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বললেও নেভাতে আসেনি ফায়ার সার্ভিস।
পটপট শব্দে বাড়ির দরজা জানালা আসবাব পুড়ছিল। ঝনঝন শব্দে ভেঙে পড়ছিল জানালার কাচ। একপর্যায়ে ওপর থেকে আগুনসমেত জানালা ভেঙে নিচে পড়ে। সেখানে আগে থেকেই রাখা আসবাবপত্রে আগুন লেগে গেলে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আশপাশের নিরাপত্তাকর্মীরা এসে পানির পাইপ দিয়ে নিচতলার আগুন নেভায়।
শেখ হাসিনার স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ডাক নাম ছিল সুধা মিয়া। তার নামেই এ বাড়ির নামকরণ।
সুধাসদনের সামনের ভবনের একটি অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা জানান, গত তত্ত্বাবধায়ক আমলে শেখ হাসিনা এই বাড়িতে কিছুদিন ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচন এখান থেকেই করেন তিনি। সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি রাষ্ট্রীয় বাসভবনে থেকেছেন।
এই বাড়িতে কিছুদিন আওয়ামী লীগের কিছু অফিস ছিল। পরে সেটি তালা মারাই থাকত। বিভিন্ন দিবসে এই বাড়িতে মাঝেমধ্যে এসেছেন শেখ হাসিনা। তার পুরো আমল জুড়ে এ বাড়ির নিরাপত্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রচুর সদস্য মোতায়েন থাকতেন।
‘বুলডোজার মিছিল’
রাতে খুলনা নগরীর ময়লাপোঁতা এলাকায় ‘শেখ বাড়ি’ বুলডোজার দিয়েছে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এটি শেখ হাসিনার চাচার বাড়ি।
সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। একই সময়ে কুষ্টিয়া শহরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের বাড়িও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
নাটোরে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেওয়া হয় সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাড়িতে। বরিশালে শেখ হাসিনার আত্মীয়, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বাসভবনও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা বুলডোজার নিয়ে নগরীর বগুড়া রোডে আমির হোসেন আমুর বাড়ির দিকে রওনা দেয়। সেখানেও বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন দেওয়া হয়।
যশোরে একদল যুবক প্রথমে শহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে শেখ মুজিবুর রহমানের মুরাল ভাঙচুর করে। এরপর তারা জেলা পরিষদ চত্বরে মুরাল ও পতিত সরকারের সময়ে নির্মিত পুরাতন কসবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উদ্বোধক হিসেবে থাকা শেখ হাসিনার নাম ফলক ভাঙচুর করে।
রাত ১২টার দিকে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি এ কে এম এ আউয়াল এবং তার ভাই পিরোজপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান মালেকের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা হল ও কামারুজ্জামান হলের নামফলক ভেঙে নতুন নাম দেওয়া হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়।
ইতিহাসের সাক্ষী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর থেকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের এই তিনতলা বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এই বাড়িতে থেকেই তিনি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
১৯৬২ সালের আইয়ুববিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬ সালের দফা, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, একাত্তরের শুরুতে অসহযোগ আন্দোলনসহ বাংলাদেশের ইতিহাসের নানা চড়াই-উৎরাইয়ের সাক্ষী এই বাড়ি।
এই বাড়ি থেকেই একাত্তরের ২৫ শে মার্চের রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টে এই বাড়িতেই সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে তাকে হত্যা করা হয়।
১৯৮১ সালে তার মেয়ে শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে শুরুতে তাকে ওই বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরে ওই বছরের ১০ জুন ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার পর শেখ হাসিনা বাড়ির মালিকানা পান। তবে তিনি সেখানে থাকেননি।
শেখ হাসিনা বাড়িটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করেন। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট বাড়িটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে এবং নাম দেয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট প্রবল গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেষ হাসিনা। কয়েক ঘণ্টা পর গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে হাজারো মানুষ।
ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বেশ কিছু ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর সেদিন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুড়ে যায় তিনতলা বাড়ির প্রতিটি কক্ষ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ভবনের সামনের দিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশে রাখা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও।
কেন এই বুলডোজার মিছিল?
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের ছয় মাস পূর্ণ হল বুধবার। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দেয়, রাতে ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা, যিনি ৫ অগাস্টের পর থেকে ভারতে আছেন।
বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে, যাদের নেতৃত্বে গত বছরের জুলাই-অগাস্টের গণ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছিল।
সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি।”
পরে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফেইসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।”
এর আগেই বুধবার বিকেলে আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ইলিয়াস হোসাইন ও পিনাকী ভট্টাচার্য ফেইসবুকে ‘ধানমণ্ডি ৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল’ ঘোষণা করেন।
একটি ফটোকার্ড শেয়ার করেন এই দুই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। তাতে বলা হয়, “হাজারো ছাত্রজনতার ওপর গণহত্যা চালিয়ে দিল্লি পালিয়ে গিয়ে সেখান থেকেই খুনি হাসিনার বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতার প্রতিবাদে ২৪-এর বিপ্লবী ছাত্র জনতার উদ্যোগে আজ (বুধবার) রাত ৯টায় এই কর্মসূচি পালিত হবে।”
প্রথমে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে সেই ‘বুলডোজার মিছিল’ শুরু হলেও পরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের খবর আসতে থাকে।
‘দালান ভেঙে ইতিহাস মোছা যাবে না’
আগের ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের ফেইসবুক পেইজে ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ভূমিকা এবং গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের কর্মসূচি নিয়েও তিনি কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, "দেশের স্বাধীনতা কয়েকজন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলবে এই শক্তি তাদের হয়নি। তারা একটি দালান ভেঙে ফেলতে পারবে, কিন্তু ইতিহাস মুছতে পারবে না।ইতিহাস কিন্তু প্রতিশোধ নেয়।”
তার ভাষায়, যারা ওই বাড়িতে ভাঙচুর করছে, তারা ‘হীনমন্যতার পরিচয়’ দিচ্ছে।
“বাড়িটার কী অপরাধ? ওই বাড়িটাকে কেন এত ভয়? আমি দেশের মানুষের কাছে আজ বিচার চাই। বলেন আপনারা, আমি কি আপনাদের জন্য কিছুই করিনি।”
সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের প্রতি কোনো ‘রাগ বা অভিযোগ’ নাই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “কিন্তু যারা এই ধ্বংস করছে, তারা তো খুনি হিসেবে চিহ্নিত হবে।”
তিনি বলেন, “দেশের মানুষের কাছে আমার জিজ্ঞাসা, যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, তারা ফ্যাসিবাদী, না যারা মানুষকে উন্নত জীবন দেয়, ত্যারা ফ্যাসিবাদী? এটা দেশের জনগণই বিচার করবে।”