মোদী-বাইডেনের বৈঠকে কলকাতায় ‘সেমিকন্ডাক্টর কারখানা’ নিয়ে আলোচনা
কলকাতায় এ বার তৈরি হতে পারে ‘সেমিকন্ডাক্টর কারখানা’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এক বিবৃতি জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে। চতুর্দেশীয় অক্ষ বা ‘কোয়াড’ সদস্য রাষ্ট্রগুলির বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকায় গিয়েছেন মোদী। তার মাঝেই দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকেই কলকাতায় ‘সেমিকন্ডাক্টর কারখানা’ তৈরির সম্ভাবনাময় দিক নিয়েও আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষের। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, এর ফলে দুই দেশেরই কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
সেমিকন্ডাক্টর হল এমন এক ধরনের বস্তু, যা নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে তড়িৎবাহী হতে পারে। মূলত বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতিতে সেমিকন্ডাক্টর ব্যবহার করা হয়। মোবাইল হোক বা ক্যামেরা, কিংবা ল্যাপটপ, টিভি— এই যন্ত্রগুলিকে সচল রাখে এক বিশেষ ধরনের ‘চিপ’ বা ‘মাইক্রোচিপ’। এই ‘চিপ’ তৈরির ক্ষেত্রে একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হল সেমিকন্ডাক্টর। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমান বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রের গুরুত্বও ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা, নতুন প্রজন্মের টেলিযোগাযোগ এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক সেন্সিং এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা হয়েছে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের। সেই প্রসঙ্গেই সেমিকন্ডাক্টর তৈরির একটি নতুন কারখানার (প্ল্যান্ট) তৈরি নিয়ে সদর্থক আলোচনা হয়েছে উভয়ের।
এই কারখানা তৈরির মূল উদ্দেশ্য ইনফ্রারেড, গ্যালিয়াম নাইট্রাইড এবং সিলিকন কার্বাইড সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা। যা ভারতের ‘সেমিকন্ডাক্টর মিশন’-এর সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ বলে দাবি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের। এ বিষয়ে আলোচনার সময়ে উঠে আসে ‘গ্লোবাল ফাউন্ডারিজ়’ নামে নিউ ইয়র্কের একটি বহুজাতিক সংস্থার নাম। এই সংস্থা বিভিন্ন দেশের সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এ বার কলকাতাতেও ওই সংস্থার একটি কারখানা তৈরির সম্ভাবনা।
মোদী ও বাইডেন উভয়েই কলকাতায় ‘গ্লোবাল ফাউন্ডারিজ়’-এর একটি কারখানা তৈরির বিষয়ে সহমত হয়েছেন। যার পোশাকি নাম হবে ‘জিএফ কলকাতা পাওয়ার সেন্টার’। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, এই সেমিকন্ডাক্টর কারখানার থেকে তৈরি হওয়া ‘চিপ’ দূষণমুক্ত দেশ গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট নির্ভর যন্ত্র ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে।
উল্লেখ্য, এ বারের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানার প্রস্তাবিত প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছিল কেন্দ্র। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে গুজরাতের সানন্দে আরও একটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্র। সেটি তৈরি করছে ‘কেন্স সেমিকন’ নামে একটি সংস্থা। এ বার কলকাতাতেও একটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরি নিয়ে বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করলেন মোদী।