বৃহস্পতিবার   ০২ জানুয়ারি ২০২৫ , ১৯ পৌষ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ০৯:১৭, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

অর্থনীতির প্রশ্নে ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছেন বাইডেনপন্থি ভোটাররা: রয়টার্স

অর্থনীতির প্রশ্নে ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছেন বাইডেনপন্থি ভোটাররা: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। এমন সময়ে সিদ্ধান্তহীন ভোটারদের সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু বেড়ে গেছে পক্ষ পরিবর্তন করা ভোটারের সংখ্যা। এই ভোটাররা গতবারের নির্বাচনে যে প্রার্থীকে ভোট দিয়েছিল এবার তাকে আর ভোট নাও দিতে পারে। আর এর কারণ হচ্ছে অর্থনীতি।

চলতি মাসে পরিচালিত রয়টার্স-ইপসোস জরিপে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে অর্থনীতি ভুল পথে যাচ্ছে মনে করে ৬১ শতাংশ ভোটার। অর্থনীতি সামাল দেওয়ার বিষয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানই ভাল বলে মত বেশিরভাগের।

অক্টোবরের রয়টার্স জরিপে দেখা যায়, অর্থনীতির প্রশ্নে ট্রাম্পকে সমর্থন করেছে ৪৬ শতাংশ ভোটার আর কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ৩৮ শতাংশ সমর্থন। ফলে সামগ্রিকভাবে এবারের নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে, গতবারের নির্বাচনে বাইডেনকে ভোট দেওয়া ভোটাররা এখন ট্রাম্পকে ভোট দিতেই মনস্থির করেছে।

এমনই একজন ভোটার তিশা ব্ল্যাকওয়েল। ২০২০ সালে তিনি বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন। তবে এ বছর তিনি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন। খাবার ও আবাসনের উচ্চ মূল্যকে এর প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ব্ল্যাকওয়েল বাস করেন দোদুল্যমান রাজ্য মিশিগানে ডেট্রয়েটের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। তিনি জানান, তার এখন একটি ভাল চাকরি আছে। কিন্তু তার বাড়িভাড়া বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এবং পানি-বিদ্যুৎ বিলও বেড়েছে।

ব্ল্যাকওয়েলের কথায়, “চারবছর আগের তুলনায় এখন যে আমি বেশি খারাপ অবস্থায় আছি তা নয়। কিন্তু সেই সময়ের তুলনায় এখন সব জিনিসের দাম সত্যিই অনেক বেশি। আগে যেখানে ৫৭৫ ডলার বাড়ি ভাড়া দিতাম সেখানে এখন ১,১০০ ডলার ভাড়া দেই। আমার মনে আছে- বার্গার তৈরির জন্য গ্রাউন্ড চকের দাম আগে ছিল ২.৯৯ ডলার, আর এখন তা দাঁড়িয়েছে ৪.৯৯ ডলারে। সবকিছুরই দাম বেশি।”

যদিও যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড মহামারী পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চিত্র অনেকটাই ভাল। স্টক মার্কেট চাঙ্গা আছে, চাকরির ক্ষেত্র এবং মজুরিও বাড়ছে, বেকারত্বের হার নেমে এসেছে এবং মুদ্রাস্ফীতিও ২০২০ সালের জানুয়ারির সময়কার চেয়ে এখন কমে এসেছে। কিন্তু খাবারের দাম, বাড়িভাড়া, ইউটিলিটি বিল এবং বাইরে খাওয়ার খরচ সবই ২০১৯ সালের সময়কার তুলনায় এখন অনেক বেশি। শ্রমের খরচ, প্রতিযোগিতার অভাব এবং সরবরাহ চেইনের মতো কিছু কারণে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

কমলা হ্যারিস এবং ট্রাম্প উভয়ই অর্থনৈতিক সমস্যা সামাল দিতে ভিন্ন পন্থা বাতলেছেন। হ্যারিস দাম বৃদ্ধি মোকাবেলা করা এবং চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন। ওদিকে, ট্রাম্পের পন্থার মধ্যে আছে, আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানো এবং অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি।

অনেক অর্থনীতিবিদই মনে করেন, অভিবাসীদের বিতাড়ন করা হলে তাতে পণ্য ও সেবার দাম আরও বেড়ে যাবে। তারপরও জরিপে অর্থনীতিতে কার অবস্থান ভাল সে প্রশ্নে দেখা গেছে, ভোটাররা ট্রাম্পকেই সমর্থন বেশি দিয়েছে হ্যারিসের চেয়ে।

অর্থনীতি নিয়ে যারা বিচার বিশ্লেষন করেন তারা বলছেন, তারা মনে করছেন, ভোটাররা হতাশায় ভুগছে। সেকারণে ট্রাম্প যে পরিকল্পনা নিয়েছেন তা কাজে আসবে বলে মনে না করলেও ভোটাররা তাকে সমর্থন করছে।

বাইডেন আমলের মূল্যস্ফীতি নিয়ে কতটা নিরাশ সে অনুভূতি প্রকাশ করে এক ভোটার বলেন, “যখন আমি রেস্তোরায় খেতে যাই… যেরকম বছরের পর বছর ধরে যাচ্ছি.. সেখানে বিল ৫০ বাক এর পরিবর্তে ৭০ বাক হয়ে গেছে। তখন আমার মনে হয় কেউ আমাকে মুখে ঘুষি মেরেছে এবং আমার ওয়ালেট থেকে ২০ ডলার চুরি করে নিয়েছে।” 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়