ঘুম থেকে ওঠার পরও ক্লান্ত লাগছে। কারণটা কী?

প্রচুর কাজে হাঁপিয়ে উঠলে আমরা ভাবি বিশ্রাম নিলেই আবার চাঙ্গা হয়ে উঠবে ক্লান্ত শরীর। কিন্তু অনেক সময় সেটা হয় না। ঘুম থেকে ওঠার পরও শরীর জুড়ে থাকে আলসেমি। অনেক ক্ষেত্রেই এর মূল কারণ শরীরে আয়রনের ঘাটতি।

মেয়েদের তো বটেই, ছেলেদের রক্তে আয়রনের ঘাটতিও এখনকার দিনে বড় সমস্যা। আর রক্তে আয়রনের অভাব পরে সৃষ্টি করতে পারে নানা জটিলতা।

শারীরিক ক্লান্তি ছাড়াও শরীরে আয়রনের ঘাটতির নানা লক্ষণ রয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠেও ক্লান্ত লাগে শরীর। মুখে, চোখে ছড়িয়ে থাকে ফ্যাকাসে ভাব। কোষে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে অল্পেই হাঁপ ধরে। সঙ্গে রয়েছে মাথা ধরার মতো সমস্যা। ত্বকের জেল্লা হারিয়ে যায়। কমবেশি এই ধরনের লক্ষণগুলি শরীরে নিয়মিত দেখা দিলে বুঝতে হবে, এ নেহাতই কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি নয়। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো করাতে হবে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা। তা হলে ধরা পড়বে রক্তাল্পতা ও আয়রনের ঘাটতির প্রমাণ।

রক্তে আয়রনের মাত্রা বাড়াতে প্রথমেই দরকার এমন খাবার, যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। খাবারে প্রাপ্ত আয়রন দু’ধরনের— হিম আয়রন ও নন-হিম আয়রন। হিম আয়রন পাওয়া যায় মাছ, মাংস, ডিমে। এ ধরনের আয়রনের প্রায় শতকরা ৪০ শতাংশ সরাসরি শরীর শোষণ করতে পারে। আর নন-হিম আয়রন পাওয়া যায় উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে।

তবে সব আয়রন শরীর শোষণ করতে পারে না। তাই আয়রন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে, যাতে শরীর তা শোষণ করতে পারে। যেমন ভাতের সঙ্গে শাক ভাজা খাওয়ার সময়ে দু’ফোঁটা লেবুর রস দিতে পারেন। এতে আয়রনের শোষণ শরীরে হবে ভাল হবে। পালংয়ের মতো শাক, ব্রকোলি, ডাল, বিন, বাদাম, বেদানা, নানা ধরনের বীজ, ব্রাউন রাইস, নানা সিরিয়াল বা দানাশস্য, হোল হুইট খেতে পারেন। আবার ভিটামিন এ এবং সি-সমৃদ্ধ খাবার তালিকায় রাখলে তা আয়রন শোষণ করতে শরীরকে সাহায্য করে।

শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর করতে অনেকে আবার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই আয়রন সাপ্লিমেন্ট খান। এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট থেকে পেটব্যথা, পেট খারাপের মতো বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তা না খাওয়াই শ্রেয়।