শুক্রবার   ১৮ অক্টোবর ২০২৪ , ২ কার্তিক ১৪৩১

মুনির রানা:

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ১৭ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ১২:৩৯, ১৭ জুলাই ২০২৪

ইতিহাস, পুরাণ ও বর্তমানের আশুরা

ইতিহাস, পুরাণ ও বর্তমানের আশুরা

বনে কাঁদে বনের পশু গো/ পাখি কাঁদে বিলে। ওরে দুনিয়া জাহান/ কাঁদে সব/ হোসেন হোসেন বলে গো  -- মহররমের বিলাপ প্রাচীন পুঁথিতে এভাবেই করুণ সুরে গ্রথিত হয়ে আছে। এইসব পুঁথি আর মীর মোশাররফ হোসেনের অমর গ্রন্থ বিষাদ সিন্ধুর কল্যাণে বাংলার ঘরে ঘরে মহররমের মহিমা প্রচারিত হয়ে আসছে বহুদিন ধরে। হাল জমানায় পুঁথির  চর্চা নেই কিংবা বিষাদ সিন্ধুও আর সেভাবে পঠিত বা সংরক্ষিত হয় কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকতে পারে। তবে ১০ মহররমের দিনটি এলে অন্যসব বিভেদ ভুলে শিয়া-- সুন্নী সবাই এখনো শোকসন্তপ্ত হয়ে ওঠেন ইমাম হোসেনের শাহাদাত বরণের কথা স্মরণ করে।

আজ সেই ১০ মহররম পবিত্র আশুরা। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করবেন এদেশের শিয়া ও সুন্নী উভয় সমপ্রদায়ের মুসলমানরা। সুন্নীরা মূলত ১০ মহররমের দিনটি উদযাপন করে থাকেন রোজা রাখা বা নফল নামাজ পরার মাধ্যমে, শিয়াদের উত্সব শুরু হয় মহররম মাসের প্রথম দিন থেকেই।

সুন্নীদের কাছেও মহররমের গুরুত্ব বহুবিধ কারণে। এমনিতেই মহররম আরবী বছরের প্রথম মাস। তদুপরি বিভিন্ন হাদিসের সূত্রে অনেক মুসলমান বিশ্বাস করেন, মহররমের দশম দিনেই হজরত আদম (আঃ) এর তাওবা কবুল হয়েছিল, হজরত নুহ ( আঃ) মহাপ্লাবন থেকে উদ্ধার পান, ফেরাউনের হাত থেকে মুক্তি পান হজরত মুসা (আঃ), হজরত ঈসা (আঃ) এর জন্ম হয়, হজরত ইউনুস (আঃ) মাছের পেট থেকে মুক্তি পান, কূপ থেকে উদ্ধার লাভ করেন হজরত ইউসুফ (আঃ)... ইত্যাদি। এর মধ্যে রয়েছে কারবালা প্রান্তরে ইমাম হোসেন (রাঃ) এর শাহাদাত বরণের ঘটনাও।

এইসব ঘটেছিল ১০ মহররমে। তাই এদিনটি তাই সর্বমুসলিমের কাছে মহান আশুরা বলে পরিচিত। আরবীতে আশুরা মানে ১০।

তারপরও মহররম সাদামাটাভাবে শিয়াদের উত্সব বলেই পরিচিত। কারবালার মর্মন্তুদ কাহিনীই এই উত্সবের প্রাণবিন্দু।

কারবালার প্রেক্ষাপট 

উসমান (রাঃ) এর মৃত্যুর পরে মুসলিম জাহানের খিলাফত নিয়ে বিতন্ডা শুরু হয়। অধিকাংশ মুসলমান হযরত আলী (রাঃ) কে খলিফা মেনে নিলেও একটা গোষ্ঠী এর বিরোধিতা করেন। খারেজি নামে একটি গোষ্ঠীরও উদ্ভব ঘটে তখন। ৫ বছরের শাসন শেষে আততায়ীর হাতে নিহত হন হযরত আলী (রাঃ)। এরপর মুয়াবিয়া ইরাক থেকে নিজেকে মুসলিম সাম্রাজ্যের খলিফা হিসেবে ঘোষণা করলে দেখা দেয় বিপত্তি। অনেকেই তখন এই পদের জন্য আলীতনয় হাসান (রাঃ) কে যোগ্য বলে মত দেন। দেখা দেয় বিভেদ। মুয়াবিয়া (রাঃ) পরে হাসান (রাঃ) এর সাথে এক চুক্তি করেন যে তার মৃত্যুর পরে মজলিসে সুরার পরামর্শক্রমেই নির্বাচিত হবেন পরবর্তী খলিফা। কিন্তু এই চুক্তি অমান্য করে মুয়াবিয়াপুত্র এজিদ নিজেকে পরবর্তী খলিফা ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যে গোপনে বিষ দিয়ে হযরত হাসান (রাঃ) কে মেরে ফেলা হয়। এজিদ খলিফা হলে তার বিরোধিতা করেন ইমাম হোসেন (রাঃ) ও তার অনুসারীরা। তাকে সমর্থন দেন ইরাকের অন্যতম প্রদেশ কুফার জনগন। তাদের সমর্থন নিয়ে এজিদের মোকাবেলা করার জন্য অনুসারীদের নিয়ে হযরত হোসেন(রাঃ) রওনা দেন কুফার দিকে। পথিমধ্যে কারবালা নামক স্থানে তিনি এজিদের বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত ও শহীদ হন। এজিদের খিলাফত অব্যাহত থাকে।

কারবালার কাহিনীর উৎস

আমাদের পুঁথি, লোকগাথা আর বিষাদ সিন্ধুতে যেভাবে চিত্রায়িত হয়েছে কারবালার কাহিনী তা কতটা বাস্তবিক, কতটা অতিরঞ্জিত তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। মাবিয়া পুত্র এজিদ নাকি সুমাইয়ার পুত্র ইবনে জিয়াদ এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যেও বিতর্ক আছে। অনেকে বলেন ইমাম হোসেনের মৃত্যুতে এজিদ সারাজীবন অশ্রুপাত করে বেরিয়েছেন। এই ব্যাপারে সাক্ষীদাতার সংখ্যাও অনেক। এই হত্যাকন্ডে ক্ষুদ্ধ হয়ে এজিদ সীমারকেও মৃতুদণ্ড দিয়েছিলেন বলে শোনা যায়।

অনেকে মনে করেন ঐতিহাসিক আল-তাবারি কারবালার ঘটনা প্রথম লিপিবদ্ধ করেন। আদতে এর প্রাচীনতম উৎস হলেন আবু মিখনাফ নামে একজন আরব যিনি ৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। একে ইবনে ইসহাকের সমসাময়িক বলা যায়। আল-তাবারি এই আবু মিখনাফের রচনাকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছেন।

আবু মিখনাফের 'কিতাব মাকতাল আল-হুসাইন' এর মাধ্যমে আমরা কারবালার ঘটনার অনেক বিস্তারিত জানতে পারি। আবু মিখনাফের পিতামহ সিফফিনের যুদ্ধে জীবন দিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়, যে যুুদ্ধটি ৬৫৭ সালে আলী ইবনে আবি তালিব এবং মুয়াবিয়ার মধ্যে হয়।

উল্লেখ্য, আবু মিখনাফের কোন মূল কাজের অস্তিত্ত্ব নেই। তার কাজ শুধুমাত্র তার ছাত্রদের মাধ্যমে এবং পরবর্তী ইতিহাসবিদ যেমন আল-তাবারির মাধ্যমে আমাদের কাছে এসেছে। আল-তাবারি প্রায়শই সরাসরি আবু মিখনাফ থেকে উদ্ধৃত করেছেন, আবার হিশামের মাধ্যমেও উদ্ধৃতি দিয়েছেন, যে হিশামের সোর্স আবার ঐ আবু মিখনাফই।

আবু মিখনাফের কাজ সম্পর্কে কিছু গুরুতর সমালোচনাও রয়েছে। যেমন, আবু মিখনাফ সনদের পরম্পরা সম্পর্কে খুব সচেতন ছিলেন না। তার বর্ণনায় প্রচুর পরিমাণে সিফফিন যুদ্ধের বর্ণনা, উপজাতীয় গল্প এবং স্থানীয় গসিপগুলি সন্নিবেশিত করার কারণে মুহাদ্দিস আলেমগণ তাকে দুর্বল উত্স হিসাবে বিবেচনা করেন। তিনি তার নিজের গোত্রের গল্পের উপর অনেক বেশি নির্ভর করেছেন।

কখনও কখনও, তিনি মূল বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ করেন না এবং কেবল 'সেখানে উপস্থিত ছিলেন এমন একজনের কাছ থেকে', বা 'বনু ফাজারা গোত্রের একজন সদস্যের কাছ থেকে' পাওয়া গেছে এভাবে সূত্র উদ্ধৃত করেন।

এসব কারণে এবং তার স্পষ্টত শিয়া স্বার্থের কারণে অনেকে আবু মিখনাফের সকল বর্ণনা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না। তবে শেষ পর্যন্ত জনমানসে মিখনাফ এবং তার বরাতে আল তাবারি প্রমুখের কাহিনীই ছাপ রেখে গেছে বেশি।

আশুরার আচার অনুষ্ঠান

মহররমকে সামনে রেখে শিয়া সমপ্রদায় ১০দিন ব্যাপী নানা আচার  -  অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এর সবই কারবালার সেই কাহিনীকে ঘিরে। যেমন সংবাদবাহক কাসিদের ভুমিকায় ঝান্ডা বহন করে দৌড়ানো, কিংবা মর্সিয়া বা বিলাপগীতিতে অংশ নেওয়া, কারবালার যুদ্ধের অনুকরণে লাঠিখেলা, এমনকি ছুরি দিয়ে নিজেকে রক্তাক্ত করা, আছে দুলদুল এর মতো করে ঘোড়াকে সাজানো, হোসেনের কবরের অনুকরণে কবর তৈরি এবং বিশেষ করে ওই কবর নিয়ে তাজিয়া মিছিল বের করা। এ ছাড়াও নানারকম খন্ড মিছিল বের হয়। যেমন তগ গাশত বা গাহওয়ারা গাশত ইত্যাদি মিছিল। এর কোনটা ভোরে, কোনটা সন্ধ্যায় বের হয়।  এছাড়াও আাাছে নানারকম মজলিস যেখানে ধর্মগুরুরা বয়ান করেন। সাধারণত ১০ মহররমের দিনেই প্রধান তাজিয়া মিছিলটি বের করা হয়। একে বলা হয় মঞ্জীল গাশত। বরাবরের মতো এবারেও ঢাকার বিভিন্ন ইমামবাড়া থেকে এই খন্ড খন্ড মিছিল বের হবে। সবচেয়ে বড় মিছিলটি বের হবে হোসেনী দালান থেকে। নানা পথ ঘুরে এটি গিয়ে শেষ হবে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়কের শেষ প্রান্তে ধানমন্ডি লেকের কারবালা প্রাঙ্গনে।

অতীতে এই অনুষ্ঠানে হিন্দু মুসলিম সকল সমপ্রদায়ের লোক যোগ দিলেও বর্তমানে কেবল প্রধানত শিয়া মুসলিমরাই এতে অংশ নেন। এমনকি সুন্নীরাও এখন আর সেভাবে এসব অনুষ্ঠানে যোগ দেন না। এইসব আচার অনুষ্ঠানকে ‘ইসলাম পরিপন্থী’ বলে মনে করেন তারা। তবে এসব কর্মকান্ডে বাধা দেন না।

মহররমের অনুষ্ঠান জাঁকজমকের সাথে শুরু হয় উমাইয়া বংশের পতনের পরে আব্বাসীয় বংশের শাসনামলে। প্রথম অনুষ্ঠানটি হয় ৯৬২ খ্রীষ্টাব্দে।

শিয়া  --  সুন্নীর মতভেদ

ইন্দোনেশিয়া থেকে মরক্কো অব্দি ছড়িয়ে থাকা শত কোটি সুন্নীর সঙ্গে শিয়াদের বিরোধ তৈরি হয়েছিল মূলত মুসলিম সাম্রাজ্যের খেলাফত নিয়েই। বিশিষ্ট ধর্মবেত্তাদের বক্তব্যে জানা যায়,  শিয়াদের কলেমায় যুক্ত “আলিউন ওয়ালিউল্লাহ ওয়াছিয়ে রাসুলুল্লাহ ওয়া খলিফাতাহু বিলা ফজল ” শব্দবন্ধই তাদের মূলত আলাদা করে দিয়েছে সুন্নীদের কাছ থেকে। নবীজীর অসিয়ত্ মোতাবেক অনুগৃহীত প্রতিনিধি ও খলিফার দাবিদারের এই বক্তব্য সুন্নীরা মানেন না।

শিয়া বিশ্বাসীরা মহম্মদ (সাঃ)এর পরে ইমাম হিসেবে স্বীকার করেন হযরত আলী (রাঃ) ও তার ধারাবাহিকতায় ১২ জন ইমামের কথা। দ্বাদশ ইমাম ৯৪০ সালে আত্মগোপনে চলে গেছেন। তিনিই পরে ইমাম মেহেদীরুপে আবির্ভূত হবেন বলে শিয়ারা মনে করেন।

সুন্নীরা মহম্মদ (সাঃ) ব্যতীত অন্য কাউকে স্বর্গীয় প্রেরণাসঞ্জাত ব্যক্তিত্ব মনে করেন না। পক্ষান্তরে অনেক শিয়াই মনে করেন হযরত আলী (রাঃ) ও তার বংশের ইমামরা মানুষ ও স্রষ্টার মধ্য সম্পর্ক তৈরির দূত হিসেবেও কাজ করতে পারে। মহম্মদ (সাঃ) এর বৈধ উত্তরাধিকারী ছাড়া অন্য কারো অধীনে দেশ শাসন তারা মেনে নিতে পারেন না। মেহেদী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা না করলেও ইমাম খোমেইনিও নিজেকে হযরত আলীর বৈধ উত্তরাধিকারী হিসেবে দাবি করতেন।

সুন্নীরা শিয়া মতবাদকে বেদাত হিসেবে দেখে। শিয়াদের ধর্মাচরণে নানারকম প্রতীকের ব্যবহার অপছন্দ করেন সুন্নীরা। এমনকি ১৯৫৯ সালের আগ পর্যন্ত শিয়াকে ইসলাম ধর্মমতের কোন পন্থা বলেও স্বীকার করেনি কোন কোন মুসলিম গোষ্ঠী।

পারস্য উপসাগরে শিয়া সুন্নীর বিভেদ যে কতো প্রকট তা উপসাগরীয় রাজনীতির নানা তত্পরতায় ফুটে ওঠে।

মহররম ব্যপকভাবে পালিত হয় ইরান, সিরিয়া, লেবানন, ও ইরাকের একাংশে। ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে শিয়াদের সংখ্যা কম। কিন্তু এখানেও বিভিন্ন স্থানে উত্সবটি বেশ জাঁকজমকের সঙ্গেই পালিত হয়। সুলতানী ও মুঘল আমলে এদেশে আসা শাসকেদের মাধ্যমে এই রেওয়াজ ছড়িয়ে পরেছিল এখানে। বিশেষ করে আকবরের শাসনামলে প্রতীকি কবর তৈরি, তাজিয়া মিছিল, মানত ইত্যাদি কর্মকান্ড ব্যপকভাবে উত্সাহিত হয়। তারই ক্ষীণধারা এখনো বহমান।

এই উত্সবের অনেক কিছুর সাথেই সুন্নীদের চরম মতভেদ থাকলেও এ নিয়ে কোথাও দাঙ্গা  -  ফ্যাসাদ বাঁধেনি, এর একটা কারণ, সম্ভবত, যাকে কেন্দ্র করে এই আয়োজন তিনি মহানবীর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র ছিলেন।

পুরাণ ও শিল্পসাহিত্যে

মহররমের  অনুষ্ঠানের সাথে প্রাচীন ইরাকের অ্যাডোনিস-তামুুজ কাল্টের গভীর সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন অনেকে। শিয়া মতবাদ গড়ে ওঠার সময় ইরাকে অ্যাডোনিস-তামুজ পূজার চল ছিল ব্যপক। সবাই মনে করতো, গরমের তাপে মৃত্যু হয়েছে ওই দেবতার, তার মৃত্যুতে ৭দিন ধরে পালিত হতো শোক। তার শব নিয়ে হাহুতাশ করে মিছিল বের করা হতো।

শিল্পসাহিত্য বাস্তবের হুবহু অনুসরণ করবে এটা আশা করাও অবশ্য ঠিক নয়। ‘বিষাদ সিন্ধ’ুকে মীর মোশাররফ হোসেন নিজেও ইতিহাসগ্রন্থ বলে বর্ণনা করেননি।

সুন্নীপ্রধান বাংলাদেশে কারবালাকেন্দ্রিক শিল্পসাহিত্যের নমুনা খুব বেশি নেই। ‘বিষাদ সিন্ধু’ ছাড়া কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত ‘মোহররম’ সহ কিছু কবিতা ও শোকগীতি একমাত্র অবলম্বন।

তবে কারবালার কাহিনী যে শিয়া সাহিত্যকে কতটা অনুপ্রেরণা যোগায় সেটা টের পাওয়া যায় ইরান, ইরাক, লেবাননের দিকে তাকালে। বিশেষ করে ইরানে কারবালার কাহিনীর প্রেরণায় রচিত অসংখ্য নাটক প্রায়শই প্রদর্শিত হয়।

কয়েক বছর আগে লেবাননের কিছু এনিমেশন চলচ্চিত্রকার কারবালার কাহিনী নিয়ে তৈরি করেছেন এক সাহসী চলচ্চিত্র। সাহসী, কারণ এই প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্রে বিশ্বনবী (সাঃ) এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রাঃ) কে একটি চরিত্র হিসেবে নিয়ে এসেছেন তারা। ‘আরজ আল তাফ’ নামের ওই ছবি মুক্তি পায় আশুরার সময়। ত্রিমাত্রিক এনিমেশনের ওই ছবিটি সুন্নীসহ অনেক মুসলিমদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। ছবির নেপথ্যে আছেন বৈরুত প্রোডাকশন এর পরিচালক আহমেদ হোমানি।

ইসলামে বিশিষ্টজনদের প্রতিকৃতি নির্মাণ নিষিদ্ধ বিধায় ‘আরজ আল তাফ’ ছবির নির্মাতারা এ ছবিতে ইমাম হোসেন (রাঃ) এর চেহারা একটা আলোকবলয় দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। চলচ্চিত্রে ইমামের চরিত্রে কণ্ঠস্বর দিয়েছেন লেবাননের দ্রুজ অভিনেতা জিহাদ আল আতরাশ।

এইসব গল্প, কবিতা, চলচ্চিত্রই মহররমের অফুরান প্রাণশক্তির অন্যতম উত্স হয়ে আছে এবং থাকবে। নানা মাধ্যমে নানাভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের এই লড়াই আর আত্মত্যাগের মহিমা প্রচারিত হবে। নজরুল যেমন লর্ড ক্লাইভের দস্যুতাকে ‘সীমারের খঞ্জরে’ প্রতীকায়িত করেছিলেন, আয়াতুল্লাহ খোমেনি যেমন শাহের দুঃশাসনকে চিহ্নিত করেছিলেন এজিদের শাসনামল বলে, আগামীতেও  তেমনি এই কারবালার কাহিনীকে কেন্দ্র করে নানা বিপ্লবের পুনরাবর্তন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়